নিউ ইয়র্কে নিহত দিদারুল, মহান বীরের অকাল প্রস্থান

নিউ ইয়র্কে নিহত দিদারুল, মহান বীরের অকাল প্রস্থান

NYM Desk

Published : 20:51, 29 July 2025

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত হয়েছেন দিদারুল ইসলাম নামে বাংলাদেশের এক পুলিশ কর্মকর্তা। এতে শহরজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তরুণ পুলিশ অফিসারের মৃত্যুতে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন শহরের মেয়র এরিক অ্যাডামস। 

দুই সন্তানের জনক দিদারুলের মৃত্যুকে মহান বীরের বিয়োগ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। মেয়রের ভাষায়, নিউ ইয়র্কবাসীর নিরাপত্তা দিতে গিয়েই প্রাণ হারিয়েছেন দিদারুল। যিনি নিজের সর্বোচ্চটা দিয়েছেন। খবর বিবিসির।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই সন্তানের জনক ছিলেন নিউ ইয়র্কে নিহত ওই পুলিশ অফিসার। স্থানীয় সময় নিউ ইয়র্কের পার্ক অ্যাভিনিউতে বন্দুকধারীর গুলিতে প্রাণ হারান তিনি। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দিদারুল যুক্তরাষ্ট্রে একজন অভিবাসী নাগরিক ছিলেন। বেঁচে থাকলে তৃতীয় সন্তানের পিতা হতেন তিনি। তবে ভাগ্যের নির্মম বাস্তবতায় মাত্র ৩৪ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন দিদারুল। বর্তমানে তার স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। ঘটনার সময় পার্ক অ্যাভিনিউতে ডিউটিতে ছিলেন। 

বন্দুকধারীর হামলায় আরও তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে দুইজন পুরুষ ও একজন নারী। আরেকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এখনও নিহতদের বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। সন্দেহভাজন বন্দুকধারী ২৭ বছর বয়সি এক তরুণ। তার নাম শেন তামুরা। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এছাড়া হামলাকারী মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত ছিলেন বলেও জানানো হয়েছে। যদিও এই হামলার উদ্দেশ্য এখনও অজানা।

৩৪৫ পার্ক অ্যাভিনিউয়ের গগণচুম্বী ভবনে প্রবেশের সময়ই দিদারুল ইসলামকে হত্যা করে বন্দুকধারী। পরে অন্যদের ওপর হামলা চালায়। ভবনের ৩৩ তলায় উঠে নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করে তামুরা। দিদারুলের মৃত্যুকে আত্মত্যাগ বলে উল্লেখ করেছে নিউ ইয়র্কের পুলিশ বিভাগ। এক্সের এক পোস্টে  তারা জানিয়েছে, তিনি আমাদের বিভাগকে খুব ভালোভাবেই উপস্থাপন করেছেন। মর্মান্তিকভাবে নিজের জীবন দিয়ে নিউ ইয়র্কবাসীকে রক্ষা করেছেন। শহরের পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ বলেছেন, আমরা তাকে যেভাবে প্রস্তুত করেছি তিনি সেভাবেই তার কাজ সম্পন্ন করেছেন। নিজের জীবনকে চূড়ান্তভাবে বিলিয়ে দিয়েছেন। জীবিত এক বীরের মতোই প্রান উৎসর্গ করেছেন। 

সংবাদ সম্মেলনে মেয়র অ্যাডামস বলেন, নিহত পুলিশ অফিসার সত্যিকার অর্থেই একজন ব্লু নিউ ইয়র্কার। শুধু তার পোশাকে নয় বরং তার ভালোবাসা ও ত্যাগের জন্য। দিদারুলের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মেয়র। পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তিন বছরের বেশি সময় পুলিশে দায়িত্বপালন করেছেন দিদারুল। 

নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সদস্যরা সোমবার সন্ধ্যায় নিহত দিদারুলের বাড়িতে যান। তাদের প্রতি সমবেদনা জানান। দিদারুলের পরিবার ও তার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করেন তারা। পরিবার জানিয়েছে এর আগে একটি স্কুলে চাকরি করতেন দিদারুল।

Share: